আপনার সংখ্যালঘু তোষণ প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে, মমতাকে তোপ রাজ্যপালের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি দ্বিতীয় দফার হামলায় সুর আরও চরমে তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা ১৪ পাতার চিঠিতে তিনি লেখেন, আপনার সংখ্যালঘু তোষণ প্রকাশিত হয়ে পড়েছে ও তা দৃষ্টিকটূ বলে দাবি করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর প্রাথমিক জবাবে রাজ্যপাল লিখেছিলেন, সাংবিধানিক ভাবে আপনি ব্যর্থ। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি মনে করিয়েছিলেন, জমিদারি চালানো আর রাজ্য চালানো এক নয়। কেউ সংবিধানের নামে শপথ নিয়ে নিজেকে আইন বলে ভাবতে পারেন না।
শুক্রবার বেলা ১১টায় মুখ্যমন্ত্রীকে বিস্তারিত জবাব দেবেন বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তাতে মোট ৩৭টি পয়েন্টের উল্লেখ করেছেন তিনি। লিখেছেন, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আপনার ব্যর্থতা থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে আপনি রণনীতি তৈরি করেছেন।
আপনার সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি হয়ে পড়েছে। যা দৃষ্টিকটূ। নিজামুদ্দিন মারকজ নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আপনি বলেছেন, আমাকে সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন করবেন না। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। একজন অভিযুক্তকে কখনোই আক্রান্ত বলে দেখানো যায় না।’
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর রাস্তায় বেরিয়ে গণ্ডি কাটা ও করোনা সচেতনতা প্রচারকে তিনি ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেছেন। সঙ্গে করোনা মোকাবিলা অবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল।
চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছেন, তিনি যা করছেন তা সংবিধান অনুসারেই করছেন, সংবিধানের নির্দেশ অমান্য করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
Initial Response @MamataOfficial. Final one tomorrow. People need to know all. State and people cannot be made to suffer at the hands of those who compromise constitutional prescriptions. None is above Law. pic.twitter.com/FA3jIFpipy
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) April 23, 2020
মুখ্যমন্ত্রীর গতকালের চিঠিতে করোনা মোকাবিলা নিয়ে কেন কোনও প্রসঙ্গের উল্লেখ নেই সেই প্রশ্নও তুলেছেন রাজ্যপাল। সঙ্গে করোনা মোকাবিলায় অবিলম্বে রাজ্যে পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানো ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
রেশন দুর্নীতি নিয়েও মুখ খুলেছেন রাজ্যপাল। এই কেলেঙ্কারিতে শাসকদলের নেতারা জড়িত বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। সঙ্গে তাঁর দাবি, পুলিশ রাজনীতির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কাজ করছে।
বলে রাখি, বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে তার এক্তিয়ার স্মরণ করিয়ে ৫ পাতার চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপধ্যায়। তাতে তিনি লেখেন, ‘মনে রাখবেন, আমি একটি গর্বিত রাজ্যের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী। আপনি একজন মনোনীত রাজ্যপাল।’
সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘রাজ্যপালের চিঠির ভাষা তাঁর, তাঁর দফতর ও মন্ত্রিসভার জন্য অবমাননাকর।’ এদিন তার জবাবে রাজ্যপাল লিখেছেন, আমি মনোনীত নই, আমি রাষ্ট্রপতির দ্বারা নিযুক্ত।